ভাইবা বোর্ড থেকে বের হয়ে চোখে পানিচলে এসেছিল,জানিস। জীবনের প্রথমচাকরির
ভাইবা।” আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম ‘কেন, খারাপ হয়েছিল খুব? সবপ্রশ্নের উওর
দিতে পারিস নি?
শুনে সাইমুম হাসল, বলল প্রশ্ন করেছিলমাত্র ২ টা। আমি
সাইমুমের কথায় তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছিলাম না,আমরা এতো পড়ে একটা লিখিত
পরীক্ষায়ও টিকতে পারি নাআর তুই ব্যাটা ব্রিলিয়েন্ট সত্য তাই বলে প্রথম
ইন্টারভিউয়েই চাকরি পেয়ে যাস নি বলে চোখের সরবত ফেলবি তা তো ঠিক না। কথায়বলে দোস্ত চাকরি না পেলে কষ্ট লাগে কিন্তু পেয়ে গেলে বেশি কষ্ট লাগে।
সাইমুম আপন মনে বলে যাচ্ছিল, ‘গোঁফওয়ালা এক ভদ্রলোক ছিল ভাইবা বোর্ডে,
প্রথমে জিজ্ঞেস করলো ‘সাইমুম’ মানে কি? বললাম সাইমুম মানেমরু-ঝড়। তারপর
ভদ্রলোক বললেন, দেখো বাবা তুমি লিখিত পরীক্ষায় খুব ভাল করেছো কিন্তু
ব্যাপার হচ্ছে আমাদের ইলেক্টেড ক্যান্ডিডেটের সংখ্যা বেশিহয়ে গেছে, এই
অবস্থায় যদিতুমি লাখ তিনেক টাকা যোগাড় করতে পারোতাহলেই আমরা তোমার জন্য
কিছু করতে পারবো। আমি বললাম,শালা ব্যাপক তো! তুই কী বললি?
সাইমুম বলল,
‘কি আর বলব, বললাম যে গ্রামের বাড়ির জমি আর ভিটে-বাড়ি মিলে ৩ লাখ হয়ে যেতে
পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট ক্লাস স্টুডেন্ট হওয়ার যোগ্যতায় যে
চাকরি পাবার নয় সে চাকরি করার ইচ্ছে আমার নেই।’ আমি ওর মুখটা খানিক চেয়ে
দেখলাম। পুরোনো কথা মনে পড়ে গেল। সৌম্য চেহারা, শান্ত স্বভাবের সাদামাটা
ছেলেটাকে প্রথম ভাল করে লক্ষ্য করেছিলাম যেদিন শুনলাম আমাদের পড়ুয়া ফার্স্ট
বয়কে টোপকে কে যেন একজন ব্রেকিং নিউজ হয়ে গেছে। ছেলেটা বরাবরই স্রোতের
প্রতিকূলে।
তারপর ওকে কিছুটা সান্ত্বনা দিয়েছিলাম বলে মনে পড়ে। এই
ঘটনার আজ প্রায় ১ বছর হয়ে গেছে। হঠাত কয়দিন আগে দুপুরবেলা সাইমুমের
হলরুম-মেটেরডাকে ঘুম ভাঙল, ‘কিরে, কি ব্যাপার?’ সে বলল যে সাইমুমের নামে আজ
এতোদিন বাদে একটা চিঠি এসেছে। ‘কীসেটা?’ এপয়েন্টমেন্ট লেটার। বলতে গিয়ে
ছেলেটার চোখের কোণে জল চিকচিক করে গেল। ‘ভাইবা বোর্ড কমিট্যি বদল
হয়েছেশুনলাম’। আমি হতভম্ব হয়ে বসে আছি। কিকরবো এখন এই চিঠির! ছিড়ে ফেলেদেব,
নাকি ছুটে গিয়ে সাইমুমকে বলব!
পি.জি হাসপাতালের জীর্ণ বেডে শোয়া
সাইমুমের বাঁচার আশাটাকে এই নির্মম চিঠিটা আজ শুধুই উপহাস করবে। নিজ জেলায়
পোস্টিং, জুনমাসের ৩ তারিখ জয়েনিং, সে পর্যন্ত কি সাইমুমের আয়ু রেখেছ খোদা?
দূরারোগ্য Bone Tumor ধরা পড়ল, দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে ক্যান্সারের বীজ।
দু-দুবার ভুলট্রিটমেন্ট আর ১৫ লাখ টাকার তলোয়ার গলায় ঝুলিয়েও তোমার মন ভরে
নিখোদা? এ তোমার কেমন বিচার!
বন্ধুরা এটি কোনো গল্প নয়, র্দুভাগ্যজনক
হলেও এটি বিধাতার কলমেলেখা আদ্যোপাম্ত সত্য ঘটনা। যে দেশে মন্ত্রীর পি.এস.
এর গাড়ী থেকে কোটি টাকার বস্তা উদ্ধার হয়, যে দেশেশপিংমলে, সিনেপ্লেক্সে,
KFC ট্রিটে চলে টাকার কতই না লীলা খেলা সে দেশেইআজ একজন সাইমুম টাকার অভাবে
মৃত্যুর দিন গুনছে। অথচ দেশের মাত্র ০.১ ভাগ মানুষের ১০০ টাকার অংশগ্রহন ই
যথেষ্ট তাকে ফিরিয়ে আনতে বন্ধুদের আড্ডায়, পরিবারের হাস্যোজ্জ্বল
পরিমন্ডলে। আমাদের সকলে দোয়া আর ভালোবাসার পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি
বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. এস. ছাত্র সাইমুমকে বাঁচাতে প্রয়োজন আর্থিক সাহায্যের।
সাহায্য প্রেরণের ঠিকানা:
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ৩৪০৬৫৬৭৫।
যোগাযোগে: সাইমুম ফোন- ০১৭২২৯৬৫৯৮০,
(বেডনং-১৫, ব্লক-সি, ৬তলা, বি.এস.এম.এম.ইউ. ),
শামীম ০১৬৭৪১১২২৮৭, নুর ০১৬৭৫৫৭৯৯৫৭।
bKash a/c no. 01812249128